Pages

Saturday, April 23, 2016

গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিডের গুরুত্ব

ফলিক এসিড পানিতে দ্রবণীয় একটি ভিটামিন ফলিক এসিড নাম এসেছে ল্যাটিনশব্দ ফোলিয়াম  থেকে যার অর্থ পাতা সবুজ পাতা সমৃদ্ধ শাক-সবজি ফলিক এসিডের বড় উৎস তাই এমন নাম ফলিক এসিড দেহের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে এটি ডিএনএ এর  গঠন,কোষ বিভাজন এবং ডিএনএ মেরামত করতে সাহায্য করে এটি  কোষ বিভাজন এবং কোষের বৃদ্ধিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ গর্ভাবস্থায় এবং নবজাতকদের জন্য ফলিক এসিড অত্যন্ত জরুরি লোহিত রক্তকণিকা তৈরির কাজে এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে এই ভিটামিন শিশু পূর্ণ বয়স্ক উভয়েরই প্রয়োজন

গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিডের গুরুত্বমায়ের স্বাস্থ্য পুষ্টির উপর গর্ভস্থ সন্তানের স্বাস্থ্য অনেকটা নির্ভর করে। সময়ে অপর্যাপ্ত খাদ্য অপুষ্টি, মা শিশুর জন্য মারাত্মক হতে পারে। সেজন্য সচেতন হতে হবে। অপুষ্টিতে আক্রান্ত মায়েরা যে সন্তানের জন্ম দেয় তাদের নানারকম সমস্যা হয়। সেসব বাচ্চাদের  জন্ম ওজন কম হয়, বুদ্ধির বিকাশ ব্যাহত হয় স্বাস্থ্য ভাল থাকে না। গর্ভাবস্থায় মা নিজের দেহ থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে গর্ভের শিশুকে যথাযথভাবে গড়ে তোলেন মায়ের পুষ্টি সঠিক না হলে বাচ্চার গঠন তাই ব্যাহত হয়।
মায়ের গর্ভে থাকাকালীন শিশুর জন্মগত ত্রুটির সমস্যা হতে পারে। গর্ভকালীন অবস্থার প্রথম তিন মাসে অধিকাংশ জন্মগত ত্রুটির সৃষ্টি হয়। জন্মের পূর্বে, জন্মের সময়, অথবা জন্মের পর যেকোনো সময়ে এই ত্রুটি দেখা দিতে পারে। অধিকাংশ জন্মগত ত্রুটি জন্মের প্রথম বছরের মধ্যেই দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে পরে দেখা যায় কিছু ত্রুটি সহজেই চোখে ধরা পড়ে, আবার কিছু ত্রুটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে ধরা পড়ে। জন্মগত ত্রুটি অল্প থেকে মারাত্মক হতে পারে। জন্মগত ত্রুটির ফলে অনেক শিশু মারাও যায়। ফলিক এসিড জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ করে।  গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিড অত্যন্ত জরুরি একটি খাদ্য উপাদান। এটি মা মায়ের শরীরে যে বেড়ে উঠছে উভয়ের জন্যই অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ
গর্ভাবস্থায়  প্রথম ট্রাইমিস্টারে  অর্থাৎ প্রথম তিন মাসে ফলিক এসিড খুব প্রয়োজনীয়। ফলিক এসিড কিছু প্রাকৃতিক খাবারে পাওয়া যায়। যেমন -করল্লা, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, মেথি, পুদিনা, ধনিয়া, বাদাম কিসমিস। কিন্তু শুধু মাত্র খাবার খেয়ে এর চাহিদা সবটুকু  পূরণ হয়না। তাই  ওষুধ হিসেবে ফলিক এসিড খেতে হয় ডাক্তারের পরামর্শ মতো। সাধারণত ডাক্তাররা ফলিক এসিড দৈনিক ৪০০ মাইক্রোগ্রাম খেতে দেন। ফলিক এসিডের অভাব হলে বাচ্চার spina bifida হয় অথবা neural tube সমস্যা হয়। কারণ সময়ে বাচ্চার মাথা মেরুদণ্ডের গঠন শুরু হয় এবং এই গঠনের জন্য ফলিক এসিড খুব দরকার। ফলিক এসিডের অভাবে ব্রেনের গঠনে সমস্যা হয়।
বাচ্চা গর্ভে আসার পূর্ব হতেই ভিটামিন প্রয়োজন। তবে সবগুলো ভিটামিন নয়। ভ্রুণ অবস্থা হতে বিকশিত হওয়ার সময় হতেই কিছু কিছু জন্মগত ত্রুটি  তৈরি হয়। তার ফলে ওই শিশুর এবরশন হয়ে যায় অথবা এবরশন করিয়ে নিতে হয়। যেমন মাথার খুলির হাড় গঠন না হওয়া (এনেনকেফালি), মাথা বড় হওয়া (হাইড্রোকেফালাস), মেরুদণ্ডের বিভিন্ন টিউমার (মেনিংগোসিল) ইত্যাদি। জন্মের পর এই সব ত্রুটি  নিয়ে শিশু বাঁচতে পারে না। তাই একজন দম্পতি যখন বাচ্চা নেয়ার পরিকল্পনা  করবেন তার একমাস আগে থেকেই ফলিক এসিড সেবন করবেন গর্ভাবস্থার তিন মাস পর্যন্ত। তাহলে অনেক সমস্যার হাত থেকে বাঁচা যাবে।
অনেকের ভ্রান্ত ধারণা ফলিক এসিড  গ্রহণ করলে গর্ভের শিশু বড় হয়ে যাবে। নরমাল ডেলিভারি করা যাবে না। সিজার করতে হবে। কিন্তু এটি মোটেও সঠিক নয়। বরং সঠিক মাত্রায় ফলিক এসিড  গ্রহণ না করলে মা শিশুর গর্ভের প্রাথমিক অবস্থা হতে ডেলিভারি পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে জটিলতার সৃষ্টি হয়। তাই মা শিশু দুজনের সুস্থতার জন্য, সঠিক মাত্রায় ফলিক এসিড গ্রহণ আবশ্যক। আশা করি সবাই সচেতন হবে। 
Info: http://www.manobkantha.com

No comments:

Post a Comment