Pages

Thursday, December 10, 2015

নয়ন তারা গাছের উপকার

নয়নতারা ভেষজটি উপমহাদেশের সমতলভূমির প্রায় সর্বত্র পাওয়া যায়। পাঁচটি পাপড়ি বিশিষ্ট এবং তিন প্রকার রঙ্গের দেখা যায়। একটি গোলাপি, হালকা গোলাপি, অন্যটি সাদা । ফল দেখতে অনেকটাই সর্ষের শুঁটির মত, বেঁটে, একটু মোটা এবং বেলুনাকার। শুঁটিতে অনেক বীজ থাকে। নয়ন তারা গাছে ভাইরাস ঘটিত রোগও হয়ে থাকে। প্রথমে সাবধানতা অবলম্বন না করলে পর পর গাছগুলি আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। সমগ্র গাছটি তিক্ত স্বাদের জন্য সাধারনতঃ গরু-ছাগলে খায় না। তবে গরু যে একেবারে খায় না, তা নয়। কোথাও কোথাও গরু কমবেশি এই গাছটি খায়। গাছটি কিন্তু গরু-ছাগলের পক্ষে বিষাক্ত। বেশী খেলেই বিপদ। বর্তমানে নয়নতারাকে নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক গবেষণা চলছে। য়নতারা ভেষজটি উপমহাদেশের সমতলভূমির প্রায় সর্বত্র পাওয়া যায়। পাঁচটি পাপড়ি বিশিষ্ট এবং তিন প্রকার রঙ্গের দেখা যায়। একটি গোলাপি, হালকা গোলাপি, অন্যটি সাদা । ফল দেখতে অনেকটাই সর্ষের শুঁটির মত, বেঁটে, একটু মোটা এবং বেলুনাকার। শুঁটিতে অনেক বীজ থাকে।
নয়নতারার বৈজ্ঞানিক নাম Catharanthus roseus এটি Apocynaceae (dogane অথবা oleander পরিবার) পরিবারের উদ্ভিদ। উচ্চতায় ৬০-৮০ সেন্টিমিটার (২ ফুট) পর্যন্ত হয়। সুন্দর সবুজ চকচকে পাতাযুক্ত গুল্ম ধরনের গাছ। ফুল ফোটে সারা বছর। গাছও লাগানো যায় সব ঋতুতে। ফুল বিভিন্ন রঙের হতে পারে যেমন, সাদা, বেগুনি, রোজিয়া ও গোলাপী বর্ণের হয়। অসাধারণ ছোট একটি ফুল। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। যে কোন মানুষকেই এই ফুল আকর্ষণ করতে সক্ষম। কলম করে এটি লাগানো যায়। গাছটি গরু ছাগলে খায় না। বুনো জংলি এই গাছটি সহজে মরেও না, আর অনাদরে অবহেলায়ও এটি বাঁচতে পারে। এই উদ্ভিদের ভেষজ গুণাগুণ রয়েছে।
নয়নতারার ভেষজ ব্যবহার
ক্বাথ তৈরির নিয়ম: নয়নতারার একটি গাছ ও শুকনো মুলের ১ গ্রাম,কাঁচা হলুদ ২ গ্রাম থেঁতলে এক কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ক্বাথ করে নিয়ে এক চতুর্থাংশ সিদ্ধ ক্বাথ
ক্রিমি রোগে: নয়নতারার সমগ্র গাছ সিদ্ধ করে সেই ক্বাথটা যোগগুলির সর্বশেষে লিখিত ব্যবহার বিধি অনুযায়ী ৫/৬দিন সেবন করলে ক্রিমির উপদ্রবটা কমে গিয়ে অন্যান্য উপসর্গগুলিও উল্লেখযোগ্য ভাবে কমতে থাকবে। তাপর আরও ৮/১০দিন ঐ ভাবে খেলে এর হাত থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।
লিউকেমিয়া (Leukemia) রোগে: এটি একটি অসাধ্যের পর্যায়ভুক্ত রোগ। আয়ুর্বেদের চিন্তাধারায় এটি রক্তবহা স্রোতের ব্যাধি। এই ক্ষেত্রে নয়নতারা ভেষজটির ব্যবহার রোগটিকে প্রতিহত করতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিক রোগেঃ রক্তপরীক্ষায় দেখা যায় রক্তে চিনির (Sugar) এর ভাগ বেশী থাকে। এই ক্ষেত্রে নয়নতারা ভেষজটির ক্বাথ খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ দ্রুত কমতে থাকে। ৮/১০ দিন ব্যবহারের পর পুনরায় রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিয়ে তাপর অবস্থা বিচার করে এটিকে ব্যবহার করা দরকার। ঐ সঙ্গে ঘন ঘন ছোট ইস্তিঞ্জা হওয়া এবং অন্যান্য উপসর্গগুলিও ধীরে ধীরে কমে যায়।
ঋতুস্রাব সমস্যায়ঃ প্রতিমাসের মেয়েদের ঋতুস্রাব বিকাশের দিন এবং অবস্থান যখন অনিয়মিত হয় এবং ঋতুস্রাবের দিন সংখ্যাও বাড়তে থাকে, অথবা যাঁদের মাসে একাধিক বার ঋতুস্রাব দেখা দেয়, স্রাবটাও বেশী নির্গত হয়, অথচ বিশেষ কোন শারীরিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না, শরীরে অন্যান্য কোন অসুবিধা থাকে না, আহার-নিদ্রা-স্বাস্থ্য স্বাভাবিক এই যে, ক্ষেত্র, এখানে নয়নতারার ব্যবহার মাস খানিক করার পর আরও একমাস ঔষধ বন্ধ করে অবস্থাটা লক্ষ্য রাখতে হয়। প্রয়োজন না হলে আর খাওয়ার দরকার নেই, উপকার না পেলে চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতিরেকে ব্যবহার করা উচিত নয়।
রক্তচাপ বৃদ্ধিতেঃ নয়নতারার ক্বাথ সেবনে রক্তের চাপ হ্রাস পায়। ৮/১০ দিন ব্যবহারের পর রক্তচাপ মেপে দেখা উচিত। রক্তচাপের হ্রাসের অবস্থা অনুযায়ী ভেষজটির ব্যবহারের সময় ও মাত্রা ঠিক করা দরকার। আর সেজন্য কোন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ বিধেয়। উচ্চ রক্তচাপে ক্বাথ সকাল ও বিকাল দু’বেলা ৮/১০ দিন খেলে রক্ত চাপ কমে। উচ্চ রক্তচাপ রোগে সাত দিন নয়নতারার পাতা খেলে রক্তচাপ কমে। এক্ষেত্রে প্রথম দিন ১ কাপ গরম পানিতে ১টি, দ্বিতীয় দিন এক কাপ পানিতে ২টি, তৃতীয় দিন ৩টি, চতুর্থ দিন ৪টি, পঞ্চম দিন ৫টি, সপ্তম দিন ৭টি পাতা দিয়ে গরম পানি খেতে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে।
সন্ধিবাতঃ গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা, তাতে ফোলা বা প্রদাহ কিছুই নাই, এই যে ক্ষেত্র, এক্ষেত্রে কাঁচা বা শুকনো নয়নতারার (সমগ্র গাছ) ক্বাথ তিল তেলের সঙ্গে পাক করে ব্যবহার করলে যন্ত্রণার উপশম হয়। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া তেলটি তৈরি না করাই ভাল।
বোলতা প্রভৃতির হুলের জ্বালায়/কীট দংশনে: বোলতা, ভীমরুল, মৌমাছি, ভোমরা, পিঁপড়ে, কাঠপিঁপড়ে প্রভৃতির হুলের জ্বালায় ও কামড়ে যন্ত্রণার হাত থেকে আশু উপকার পেতে হলে নয়নতারার পাতা থেঁতো করে সেই রসটা লাগাতে হবে। পাতার বাটা লাগালেও চলবে। কান্ড- কান্ড নরম,রসালো ও গাঢ় সবুজ। ডাল পালা এপাশ ও পাশ ছড়ানো। গাছ লম্বা দেড় থেকে ৬০ থেকে ৭০ সে.মি.। সাদা, গোলাপি, হালকা নীল ও সাদার উপর গোলাপী চোখের নয়ন তারা দেখা যায়।

মূল: মুল গুচ্ছ। অস্থানিক। সহজে চারপাশে চড়িয়ে যায়।

পাতা: পাতা গাঢ় সবুজ ৭/৮ সে.মি. লম্বা ও ২/৩ সে.মি প্রসস্ত। পাতার মধ্যে উপশিরা বিদ্যমান। একে কেউ কেউ পয়সা ফুল আবার অনেকে একে বিস্কুট ফুলও বলে থাকেন।

ফুল- ফুল সাদা, গোলাপী, সাদার উপর গোলাপী গন্ধহীণ তবে আকর্ষণীয় হয়ে থাকে। ফুলের পাচঁটি  পাপড়ি । প্রত্যেকটি পাপড়িই ৩ সে.মি. পর্যন্ত চওড়া।দলনল সরু,প্রায় আড়াই সে.মি. লম্বা। ফুল সারা বছরই ফোটলেও শরৎ ও বসন্ত  ঋতুতে বেশি বেশি ফোটে। বীজ-ফুল থেকে ফল এবং ফল থেকে বীজ হয়। বীজ কালো ও অমসৃণ।

বংশ বিস্তার: কালো রঙের বীজ থেকে চারা উৎপাদনের মাধ্যমে বংশ বিস্তার ঘটে। খুবই সহজেই টবে নয়নতারার চাষ করা যায়।

কাজঃ- নয়নতারা ফুলের গাছে ৬০ টিরও বেশি উপ ক্ষার রয়েছে।এর মধ্যে ভিনক্রিস্টিন ও ভিনব্লাস্টিন লিউকেমিয়া রোগের ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। উচ্চ রক্তচাপে নয়নতারার একটি গাছ ও শুকনো মুলের ১ গ্রাম,কাচাঁ হলুদ ২ গ্রাম থেতলে এক কাপ পানিতে সিদ্ধ করে ক্বাথ করে নিয়ে এক চতুর্থাংশ সিদ্ধ ক্বাথ সকাল ও বিকাল দু’বেলা ৮/১০ দিন খেলে রক্ত চাপ কমে। ক্বাথটি ৫/৬ দিন খেলে কৃমির উপদ্রব কমে এবং ১৫/২০দিন খেলে কৃমি থেকে রোগমুক্ত হওয়া যায়। এছাড়া এতে ডায়াবেটিক রোগও নিয়ন্ত্রিত হয়। অথবা, উচ্চ রক্তচাপ রোগে সাত দিন নয়নতারার পাতা খেলে রক্তচাপ কমে। এক্ষেত্রে প্রথম দিন ১ কাপ গরম পানিতে ১টি, দ্বিতীয় দিন এক কাপ পানিতে ২টি, তৃতীয় দিন ৩টি, চতুর্থদিন ৪টি, পঞ্চমদিন ৫টি, সপ্তম দিন ৭টি পাতা দিয়ে গরম পানি খেতে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসলে আর নয়ণতারার পাতা খাওয়ার প্রয়োজন নেই। 
তথ্যসূত্র: http://helpfulhub.com/22355/

No comments:

Post a Comment