মেহেদী মানব সমাজের জন্য প্রকৃতির এক অনবদ্য দান। এর রয়েছে এন্টি ফাঙাল,
এন্টি মাইক্রোবিয়াল, এন্টি ব্যাকটেরিয়াল, এন্টি-ইনফ্লেমেটরী, কুলিং, হিলিং ও
সিডেটিভসহ অনেক গুনাগুণ যা মানব দেহ ও মনের বিভিন্ন রোগ প্রশমনকারী। তাই
হাজার হাজার বছর ধরে মানব জাতি পাথ্য হিসেবে মেহেদী গাছের বিভিন্ন অংশ নানা
কারনে ব্যবহার করে আসছে। উনানি চিকিৎসকদের মতে চুল উঠে যাওয়া বা পাকায় একটি হরীতকী ও ১০-১২ গ্রাম
মেহেদিপাতা একটু থেতো করে ২৫০ মিলি পানিতে সিদ্ধ করে ৬০-৭০ মিলি থাকতে
নামিয়ে ছেঁকে ঠান্ডা হলে মাথায় লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
এ ছাড়া খুশকি দূর করতেও এটি কার্যকর ভূমিকা পালন করে। প্রাকৃতিক মেহেদীর
ভিতরে এক প্রকারের প্রাকৃতিক এসিড রয়েছে যা এন্টি ফাঙাল, এন্টি
মাইক্রোবিয়াল ও এন্টি ব্যাকটেরিয়াল যা চুলকে লম্বা, উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যবান
করে। এটি চুল পড়াও রোধ করে।
অনেক বিশেষজ্ঞ মেহেদীকে বলেছেন পৃথিবীর সেরা কন্ডিশনার। প্রাকৃতিক
মেহেদী পেস্ট মাথা ঠান্ডা রাখে ও মাথা ব্যাথা দূর করে। ২৫০ গ্রাম সরিষার
তেল একটি পাত্রে সিদ্ধ করার সময় ৬০ গ্রাম হেনা পাতা ক্রমান্বয়ে যোগ করা হয়;
তারপর একটি কাপড় দিয়ে ছেঁকে বোতলে সংরক্ষণ করা হয়। এটি নিয়মিত মাখলে চুলের
স্বাস্থ্যবান বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে। এটি মাথার টাকের চিকিৎসারও সহায়ক।
অত্যান্ত উপকারি ভেষজ হেনার পাতা ও ফুল হতে আহরিত তেল অনেক চর্ম-মলম
তৈরির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। চামড়ায় ক্ষত, পোড়া ও চামড়ার ফ্যাকাসে হলুদ দাগ
চিকিৎসায় অত্যান্ত কার্যকরী ঔষধ হিসাবে ব্যবহার হয়। স্কেবিস, চর্মের
চুলকানি জাতীয় ও নখের ফাটার চিকিৎসায় হেনা পেস্ট ব্যবহার হয়।
ত্বকের বিভিন্ন রোগ যেমন- একজিমা, খোসপাঁচড়া, ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া
ইনফেকশন, ঘা, কুষ্ঠু, শ্বেতী ইত্যাদি রোগে মেহেদিপাতার রস উপকারী। পাতার রস
দিনে দুই বার আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে।
এ ছাড়া যাদের গায়ের বা মুখের চামড়া কুঁচকে ঢিলে হয়ে বা ঝুলে গেছে, তারা এই পাতার রস দিয়ে তৈরি তেল মাখলে অনেকটা স্বাভাবিক হবে।
গরমকালে যাদের শরীওে ঘাম বেশি হয়ে দুর্গন্ধ হয় তারা বেনামূল (Vetiveria zizanioides) মেহেদিপাতা সিদ্ধ পানিতে গোসল করলে উপকার পাবেন।
দেহ হতে পানি হ্রাস প্রতিরোধ করে; আবার ময়েশ্চার ধারণের ফলে কোন অঙ্গ স্ফিতীর রোধে এক প্রকার ডিসল্ভিং ফ্যাক্টর গঠনে কাজে লাগে।
হাত-পা জ্বালায় পাতার পেস্ট পুরু করে লাগিয়ে রাখলে উপকার পাওয়া যায়।
কারণ মেহেদিতে আছে শীতলকারক উপাদান।
গর্ভবতী মায়ের ৮ মাসের সময় তার নাভীসহ গোটা তলপেটে মেহেদীর ভরাট ডিজাইন
করলে গর্ভজনিত কারণে চামড়ার ফাঁটা ও দাগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
No comments:
Post a Comment