Pages

Wednesday, December 23, 2015

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য 'বায়োস্কোপ' কোথায় যেন হারিয়ে গেল

কালের বিবর্তনে অনেক কিছু বদলে যাচ্ছে। হারিয়ে যাচ্ছে স্বপ্ন । সেখানে স্থান করে নিচ্ছে প্রযুক্তির কৃত্রিমতা। তেমনি হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার চিরচেনা ঐতিহ্য বায়োস্কোপ। যা এক সময় ছিল গ্রাম বাংলার শিশুদের চিত্ত বিনোদনের মাধ্যম। কিন্তু ভেঁপু বাঁশি বাজিয়ে সবাইকে আহবান জানিয়ে দুলদুল ঘোড়া, মক্কা-মদিনা, আজমির শরীফ ও ক্ষুদিরামের ফাঁসির বায়োস্কোপ দেখিয়ে আজও শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষকে সমান তালে আনন্দ দিয়ে যাচ্ছেন আতোয়ার রহমান (৪৫)।
 
আতোয়ারের বাড়ি মানিকগঞ্জ ঘিওর উপজেলার পয়লা ইউনিয়নের বড়কুষ্টিয়া গ্রামে। ছোটবেলায় তার হাতেখড়ি বাবা পাষাণ পাগলার কাছ থেকে। তবে নিজ উদ্যোগে বায়োস্কোপ দেখানোর কাজ শুরু করেন ১৫ বছর আগে। এর আগে বাবার সঙ্গে কাজ করেছেন প্রায় ১০ বছর। মানিকগঞ্জ ও এর আশে পাশের বিভিন্ন অঞ্চলের মেলা, পূজা-পার্বণে তার বায়োস্কোপ প্রদর্শনী হয়ে থাকে।
র্তমান সময়ে গ্রাম বাংলায় বায়োস্কোপ এমনই বিরল যে, যাদুঘরে রেখে দেয়ার জন্যও অন্তত একটি বায়োস্কোপ কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বৈশাখ উপলক্ষে সুদূর রাজশাহী থেকে বায়োস্কোপ দেখিয়ে অর্থ উপার্জনের আশায় রাজধানীতে এসেছেন জলিল মিয়া। ঠাঁই নিয়েছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ছবির হাটে। কৈশোর হৃদয় চুরি করে হারিয়ে যাওয়া এই হঠাৎ খুঁজে পাওয়া বায়োস্কোপ আজকের বৈশাখী আয়োজন-
বায়োস্কোপ, গ্রাম বাংলার সিনেমা হল:
বায়োস্কোপের সাথে বাঙালিকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। বিশেষ করে গ্রাম বাংলার জনপদে বেড়ে উঠা মানুষকেতো বটেই। তবে যারা শহরের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি জীবন যাপন করে অভ্যস্থ কিংবা যাদের জন্ম এই মাত্র একযুগ আগে তাদের কাছে হয়তো হাস্যকর এক বোকা বাক্সো মনে হবে। কিন্তু বায়োস্কোপ মোটেও হাস্যকর কোনো বস্তু ছিলো না, কিংবা ছিলো না কোনো বোকা বাক্সোও!
প্রকৃতপক্ষে বায়োস্কোপ গ্রাম বাংলার সিনেমা হল। রঙ-বেরঙের কাপড় পরে, হাতে ঝুনঝুনি বাজিয়ে বিভিন্ন রকমের আলোচিত ধারা বর্ণনা করতে করতে ছুটে চলতো গ্রামের স্কুল কিংবা সরো রাস্তা ধরে। হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতোন তার পেছন পেছন বিভোর স্বপ্ন নিয়ে দৌড়াতো গ্রামের ছেলে মেয়েরা
বায়োস্কোপওয়ালার এমন ছন্দময় ধারা বর্ণনায় আকর্ষিত হয়ে ঘর ছেড়ে গ্রামের নারী পুরুষ ছুটে আসতো বায়োস্কোপের কাছে। একসাথে সকলে ভিড় জমালেও তিন কি চার জনের বেশী একসাথে দেখতে না পারায় অপেক্ষা করতে হতো। সিনেমা হলের মতোন এক শোএর পর ফের আর তিন বা চার জন নিয়ে শুরু হতো বায়োস্কোপ
বায়োস্কোপ দেখানো শুরু করলেইকি চমৎকার দেখা গেলোবলে ফের শুরু হতো বায়োস্কোপওয়ালার ধারা বিবরণী। আর এই বায়োস্কোপ দেখানোর বিনিময়ে দুমুঠো চাল কিংবা ২টাকা নিয়েই মহা খুশি হয়ে ফিরে যেতো একজন বায়োস্কোপওয়ালা
কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে বাংলার বিনোদনের এই লোকজ মাধ্যমটি। টিভি, ভিসিডি আর আকাশ সংস্কৃতির সহজলভ্যতার কারণে আপনা আপনিই উঠে গেছে বায়োস্কোপের চল্। তবুও কোথাও না কোথাও একজন থাকে
একজন বায়োস্কোপওয়ালার গল্প
মুহাম্মদ জলিল মিয়া, বাড়ি রাজশাহীর বাঘমারা থানার প্রত্যন্ত এক গ্রামে। দীর্ঘ পয়ত্রিশ বছর যাবৎ গ্রামে গ্রামে গিয়ে বায়োস্কোপ দেখিয়েছেন। একযুগ আগেও বায়োস্কোপের যে জৌলুস ছিলো, প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় তা আজ বিলীন হয়ে গেছে। কিন্তু জলিল মিয়া আর আরদের মতোন অকেজো জিনিষ হিসেবে ছুড়ে দেননি বায়োস্কোপকে। জড়িয়ে ধরে রেখেছেন সন্তানের মতো। মানুষ এই বায়োস্কোপ না দেখলেও যখনই তার মনে চায়, তিনি গ্রামের সরু রাস্তা ধরে বায়োস্কোপ নিয়ে ছুটে চলেন। জলিল মিয়া জানেন, বায়োস্কোপ এখন আর কেউ টাকা দিয়ে দেখবে না, তারপরও তিনি বায়োস্কোপ নিয়ে বের হয়ে পড়েন।
পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে কিছু উপার্জনের আশায় সুদূর রাজশাহী থেকে রাজধানীর সোওরাওয়ার্দী উদ্যানেরছবির হাট’ – আশ্রয় নিয়েছেন জলিল মিয়া। তার সাথে একদিন সময় কাটানোর পর তিনি বললেন, বায়োস্কোপ নিয়ে তার সংগ্রামের কথা, জীবন-জীবীকার কথা
- See more at: http://www.bhorerkagoj.net

র্তমান সময়ে গ্রাম বাংলায় বায়োস্কোপ এমনই বিরল যে, যাদুঘরে রেখে দেয়ার জন্যও অন্তত একটি বায়োস্কোপ কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বৈশাখ উপলক্ষে সুদূর রাজশাহী থেকে বায়োস্কোপ দেখিয়ে অর্থ উপার্জনের আশায় রাজধানীতে এসেছেন জলিল মিয়া। ঠাঁই নিয়েছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ছবির হাটে। কৈশোর হৃদয় চুরি করে হারিয়ে যাওয়া এই হঠাৎ খুঁজে পাওয়া বায়োস্কোপ আজকের এ বৈশাখী আয়োজন-
বায়োস্কোপ, গ্রাম বাংলার সিনেমা হল:
বায়োস্কোপের সাথে বাঙালিকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কিছু নেই। বিশেষ করে গ্রাম বাংলার জনপদে বেড়ে উঠা মানুষকেতো বটেই। তবে যারা শহরের চার দেয়ালের মধ্যে বন্দি জীবন যাপন করে অভ্যস্থ কিংবা যাদের জন্ম এই মাত্র একযুগ আগে তাদের কাছে হয়তো হাস্যকর এক বোকা বাক্সো মনে হবে। কিন্তু বায়োস্কোপ মোটেও হাস্যকর কোনো বস্তু ছিলো না, কিংবা ছিলো না কোনো বোকা বাক্সোও!
প্রকৃতপক্ষে বায়োস্কোপ গ্রাম বাংলার সিনেমা হল। রঙ-বেরঙের কাপড় পরে, হাতে ঝুনঝুনি বাজিয়ে বিভিন্ন রকমের আলোচিত ধারা বর্ণনা করতে করতে ছুটে চলতো গ্রামের স্কুল কিংবা সরো রাস্তা ধরে। হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতোন তার পেছন পেছন বিভোর স্বপ্ন নিয়ে দৌড়াতো গ্রামের ছেলে মেয়েরা।
বায়োস্কোপওয়ালার এমন ছন্দময় ধারা বর্ণনায় আকর্ষিত হয়ে ঘর ছেড়ে গ্রামের নারী পুরুষ ছুটে আসতো বায়োস্কোপের কাছে। একসাথে সকলে ভিড় জমালেও তিন কি চার জনের বেশী একসাথে দেখতে না পারায় অপেক্ষা করতে হতো। সিনেমা হলের মতোন এক শো –এর পর ফের আর তিন বা চার জন নিয়ে শুরু হতো বায়োস্কোপ।
বায়োস্কোপ দেখানো শুরু করলেই ‘কি চমৎকার দেখা গেলো’ বলে ফের শুরু হতো বায়োস্কোপওয়ালার ধারা বিবরণী। আর এই বায়োস্কোপ দেখানোর বিনিময়ে দু’মুঠো চাল কিংবা ২টাকা নিয়েই মহা খুশি হয়ে ফিরে যেতো একজন বায়োস্কোপওয়ালা।
কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে বাংলার বিনোদনের এই লোকজ মাধ্যমটি। টিভি, ভিসিডি আর আকাশ সংস্কৃতির সহজলভ্যতার কারণে আপনা আপনিই উঠে গেছে বায়োস্কোপের চল্। তবুও কোথাও না কোথাও একজন থাকে
boikoup1একজন বায়োস্কোপওয়ালার গল্প…
মুহাম্মদ জলিল মিয়া, বাড়ি রাজশাহীর বাঘমারা থানার প্রত্যন্ত এক গ্রামে। দীর্ঘ পয়ত্রিশ বছর যাবৎ গ্রামে গ্রামে গিয়ে বায়োস্কোপ দেখিয়েছেন। একযুগ আগেও বায়োস্কোপের যে জৌলুস ছিলো, প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় তা আজ বিলীন হয়ে গেছে। কিন্তু জলিল মিয়া আর আরদের মতোন অকেজো জিনিষ হিসেবে ছুড়ে দেননি বায়োস্কোপকে। জড়িয়ে ধরে রেখেছেন সন্তানের মতো। মানুষ এই বায়োস্কোপ না দেখলেও যখনই তার মনে চায়, তিনি গ্রামের সরু রাস্তা ধরে বায়োস্কোপ নিয়ে ছুটে চলেন। জলিল মিয়া জানেন, বায়োস্কোপ এখন আর কেউ টাকা দিয়ে দেখবে না, তারপরও তিনি বায়োস্কোপ নিয়ে বের হয়ে পড়েন।
পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে কিছু উপার্জনের আশায় সুদূর রাজশাহী থেকে রাজধানীর সোওরাওয়ার্দী উদ্যানের ‘ছবির হাট’ –এ আশ্রয় নিয়েছেন জলিল মিয়া। তার সাথে একদিন সময় কাটানোর পর তিনি বললেন, বায়োস্কোপ নিয়ে তার সংগ্রামের কথা, জীবন-জীবীকার কথা ।
- See more at: http://www.bhorerkagoj.net/m/view.php?id=b25saW5lLzIwMTUvMDQvMTQvNjY0NzQ=#sthash.uSwBM0Hz.dpuf

No comments:

Post a Comment