নিম ও নিমপাতার ব্যবহার যেন আমরা ভুলতে বসেছি। অথচ অসাধারণ সব গুণ রয়েছে
এই গাছের ও পাতার। আমাদের বাবা-মা, দাদী-নানী’রা এই গাছের ও পাতার গুণের
কথা জানলেও এই প্রজন্মের অনেকে নিমগাত ও এর পাতা যেন চোখেও দেখেনি। কী গুণ
আছে এই গাছের ও পাতার, জেনে নিন এখনই।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে নিমপাতা। জীবাণু ও সংক্রমণ প্রতিরোধে এই পাতা
অপ্রতিদ্বন্দ্বী। যেকোনো ধরনের জমাট ময়লা পরিষ্কারে কার্যকর। ত্বকের যত্নে
নিমপাতা তুলনাহীন। খুশকি সারাতে সহায়তা করে এই পাতা। মুখের যত্নেও নিমপাতা
অনন্য। এই পাতা খাবারে ব্যবহার করলে রক্ত পরিষ্কার হয়। রক্তের গ্লুকোজের
মাত্রার ভারসাম্য ঠিক রাখে। খোসপাঁচড়া, ছত্রাক বা ছারপোকার কামড় সারাতেও
নিমপাতা অনন্য।
পাতা, ফল, ছাল বা বাকল, নিমের তেল, বীজ। এক কথায় নিমের সমস্ত অংশ
ব্যবহার করা যায়। বিশ্বব্যাপী নিম গাছ, গাছের পাতা, শিকড়, নিম ফল ও বাকল
ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে পরিচিত। বর্তমান বিশ্বে নিমের কদর তা কিন্তু এর
অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যহারের জন্য। নিম ছত্রাকনাশক হিসেবে, ব্যাকটেরিয়া
রোধক হিসেবে ভাইরাসরোধক হিসেবে, কীট-পতঙ্গ বিনাশে চ্যাগাস রোধ
নিয়ন্ত্রণে, ম্যালেরিয়া নিরাময়ে,দন্ত চিকিতসায় ব্যাথামুক্তি ও জ্বর
কমাতে, জন্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়।
- উকুন নাশ: নিমের পাতা বেটে হালকা করে মাথায় লাগান। ঘন্টা খানেক ধরে মাথা ধুয়ে ফেলুন। ২/৩ দিন এভাবে লাগালে উকুন মরে যাবে।
- অজীর্ণ: অনেকদিন ধরে পেটে অসুখ। পাতলা পায়খানা হলে ৩০ ফোটা নিম পাতার রস, সিকি কাপ পানির সঙ্গে মিশিয়ে সকাল- বিকাল খাওয়ালে উপকার পাওয়া যাবে।
- খোস পাচড়া: নিম পাতা সিদ্ধ করে পানি দিয়ে গোসল করলে খোসপাচড়া চলে যায়। পাতা বা ফুল বেটে গায়ে কয়েকদিন লাগালে চুলকানি ভালো হয়।
- পোকা-মাকড়ের কামড়: পোকা মাকড় কামল দিলে বা হুল ফোটালে নিমের মূলের ছাল বা পাতা বেটে ক্ষত স্থানে লাগালে ব্যথা উপশম হবে।
- দাতের রোগ: নিমের পাতা ও ছালের গুড়া কিংবা নিমের ডাল দিয়ে নিয়মিত দাঁত মাঁজলে দাত হবে মজবুত, এবং দাঁতের রোগ হতে রক্ষা পাবে।
- জন্ম নিয়ন্ত্রণে নিম: নিমের তেল একটি শক্তিশালী শ্রক্রানুনাশক হিসেবে কাজ করে। ভারতীয় বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন যে, নিমের তেল মহিলাদের জন্য নতুন ধরনের কার্যকরী গর্ভনিরোধক হতে পারে। এটি ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই শুক্রানু মেরে ফেলতে সক্ষম।
মুখে একটু ব্রণ হলে বা ত্বকের কোন সমস্যা
হলেই আমাদের দুশ্চিন্তা শুরু হয়ে যায়। এই দুশ্চিন্তায় দুশ্চিন্তায় একটা
ব্রণের জায়গায় আমরা দুই তিনটি ব্রণ বানিয়ে ফেলি। অথচ হাতের কাছেই প্রাকৃতিক
উপাদান নিমপাতা আমাদের এক্ষেত্রে খুব সাহায্য করতে পারে। নিমপাতার ব্যবহার
অনেক প্রাচীণ বিধায় অনেকেই এর ব্যবহার জানেন কিন্তু এত এত কস্মেটিকের
ছলনায় আমরা আসলেই কি এর কথা মনে রেখেছি? আসুন জেনে নেই তিতা নিমের মধুর
গুণের কথা এবং এর ব্যবহারঃ
০১. নিমপাতা ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া
বিরোধী। তাই ত্বকের সুরক্ষায় এর জুড়ি নেই। ব্রণের সংক্রমণ হলেই নিমপাতা
থেঁতো করে লাগালে ভালো ফল নিশ্চিত।
০২. মাথার ত্বকে অনেকেরই চুল্কানি ভাব হয়,
নিমপাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগালে এই চুলকানি কমে, চুল শক্ত হয়, চুলের
শুষ্কতা কমে যায় এবং চুল গজানো তরাণ্বিত হয়।
০৩. শুধুমাত্র চুলের নয় ত্বকের চুলকানিতেও নিমপাতা বেটে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
০৪. নিয়মিত নিমপাতার সাথে কাঁচা হলুদ
পেস্ট করে লাগালে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি ও স্কিন টোন ঠিক হয়। তবে হলুদ
ব্যবহার করলে রোদ এড়িয়ে চলাই ভালো। নিমপাতার চেয়ে হলুদের পরিমাণ কম হবে।
তথ্যসূত্র: http://muktojibon.com/?p=800
No comments:
Post a Comment