শুক্রবার শেরপুর শহরের নবীনগর ছাওয়াল পীরের দরগা সংলগ্ন খোলা মাঠে শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী পৌষ সংক্রান্তি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬৩ বছরের ধারাবহিকতায় নবীনগর এলাকাবাসীর উদ্যোগে প্রতি বছরের মতো এবারও এ
পৌষমেলার আয়োজন করা হয়। পৌষমেলায় গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী ‘গাঙ্গি’ খেলা
(কুস্তি) ছাড়াও ঘোড়দৌড়, সাইকেল রেস এবং তৈলাক্ত কলাগাছ বেয়ে ওঠা
প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
‘চে..লে..লে..লে..ঢুই, ‘চে..লে..লে..লে..ঢুই..ঢুই’-ধ্বনিতে হাঁক চলে গাঙ্গীবীরের হাত ধরে তার
প্রতিদ্বন্দ্বি খুঁজতে। কেউ একজন এগিয়ে এলে তার সঙ্গে চলে ওই গাঙ্গীবীরের
‘গাঙ্গী’ খেলা। তিন মিনিটের গাঙ্গী খেলায় যিনি জয়ী হন তাকে নিয়ে হাত ধরে
আবারও একইভাবে হাঁক ছেড়ে খোঁজা হয় পরবর্তী চ্যালেঞ্চার। এভাবেই একের পর
একজন গাঙ্গীবীরের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হয় ‘গাঙ্গী’ খেলার
চূড়ান্ত বিজয়ীকে। এই গাঙ্গী খেলা কোথাও ‘কুস্তি’ আবার কোথাও ‘বলি খেলা’
নামে পরিচিত। তবে শেরপুরে পৌষমেলার প্রধান আকর্ষণ এই ‘গাঙ্গী খেলা’।
বড়-মাঝারি-ছোট এ তিনটি গ্রুপে অনুষ্ঠিত হয় গাঙ্গী খেলা। পরে বিভিন্ন খেলা
শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
মেলায় বিভিন্ন পিঠা ও বাংলার ঐতিহ্যবাহী
বিভিন্ন মজাদার খাবারের দোকান বসে। পাশের পাল পাড়া এলাকার মৃৎশিল্পীদের
সুনিপুণ হাতে তৈরি বিভিন্ন ধরনের খেলনা ও তৈজসপত্র ছাড়াও শিশুদের বিভিন্ন
ধরনের খেলনা, মেয়েদের প্রসাধনী ও চুড়ি-মালা, গৃহস্থলি বিভিন্ন আসবাবপত্রের
পসরাও সাজিয়ে বসেন দোকানীরা।
এছাড়া গ্রামীণ ঐতিহ্যের চিনির তৈরি সাজ,
উরফা, কদমা, বাতাসা, নিমকি কালাই, খুরমা, ঝুরি, মিষ্টি এবং বিভিন্ন মুখরোচক
খাবারের দোকানও বসে। শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সের
মানুষের উপচেপড়া ভিড়ে পৌষমেলা হয়ে উঠে জমজমাট ও প্রণবন্ত। রীতি অনুযায়ী
মেলা চলে দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।
মেলায় গ্রামের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি
শহরের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার হাজার হাজার নারী-পুরুষ ভিড় জমায়। পৌষমেলাকে
ঘিরে নবীনগর ও আশপাশের এলাকার বিয়ে হয়ে যাওয়া মেয়েরা বাবার বাড়িতে বেড়াতে
আসার প্রচলনও রয়েছে।
Info: http://www.24livenewspaper.com/site/?url=www.banglamail24.com/
No comments:
Post a Comment