নীল নদের উপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছিল প্রাচীন
মিশরের সভ্যতা। প্রতি বছর নীল নদের বন্যায় পলি পড়ে উভয় কূলের মাটি
উর্বর হতো, ফলে প্রচুর ফসল হতো। এ ছাড়া খালের সাহায্যে পানি নিয়ে নীল
নদের দুই তীরে অঞ্চলগুলোতে চাষাবাদ করা হতো। এই আবাদি এলাকার পরিমাণ ছিল
বর্তমান মিশরের জনবসতি এলাকার প্রায় সমান। খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ সালে মিশরে ছিল দুইটি বড়
রাজ্য। উর্ধাঞ্চলীয় মিশর রাজ্য ছিল নীল নদের বদ্বীপ সীমা থেকে ৫০০ মাইল
দক্ষিণে বর্তমানের আসোয়ান পর্যন্ত বিস্তৃত। অন্যদিকে নিম্নাঞ্চলীয় মিশর
রাজ্য বিস্তৃত ছিল নীল নদের পুরো বদ্বীপ এলাকাজুড়ে। খ্রিস্টপূর্ব ৩১০০
সালে উর্ধাঞ্চলীয় মিশরের রাজা মেনেস নিম্নাঞ্চলীয় মিশর জয় করে দেশটিকে এক রাজ্যে পরিণত করেন। আফ্রিকা মহাদেশের একটি নদী। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম নদী। এর দুইটি উপনদী রয়েছে, শ্বেত নীল নদ ও নীলাভ নীল নদ। এর মধ্যে শ্বেত নীল নদ দীর্ঘতর। শ্বেত নীল নদ আফ্রিকার মধ্যভাগের হ্রদ অঞ্চল হতে উৎপন্ন হয়েছে। এর সর্বদক্ষিণের উৎস হল দক্ষিণ রুয়ান্ডাতে ২°১৬′৫৫.৯২″ দক্ষিণ ২৯°১৯′৫২.৩২″ পূর্ব, এবং এটি এখান থেকে উত্তর দিকে তাঞ্জানিয়া, লেক ভিক্টোরিয়া, উগান্ডা, ও দক্ষিণ সুদানের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। নীলাভ নীল নদ ইথিওপিয়ার তানা হ্রদ হতে উৎপন্ন হয়ে পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে সুদানে প্রবেশ করেছে। দুইটি উপনদী সুদানের রাজধানী খার্তুমের নিকটে মিলিত হয়েছে।
নীলের উত্তরাংশ সুদানে শুরু হয়ে মিশরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত, প্রায়
পুরোটাই মরুভূমির মধ্য দিয়ে। মিশরের সভ্যতা প্রাচীন কাল থেকেই নীলের উপর
নির্ভরশীল। মিশরের জন্সংখার অধিকাংশ এবং বেশিরভাগ শহরের অবস্থান আসওয়ানের
উত্তরে নীল নদের উপত্যকায়। প্রাচীন মিশরের প্রায় সমস্ত সাংস্কৃতিক এবং
ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও এর তীরেই অবস্থিত। বিশাল ব-দ্বীপ সৃষ্টি
করে নীল নদ ভূমধ্যসাগরে গিয়ে মিশেছে।
তথ্যসূত্র: https://rumansblog.wordpress.com
No comments:
Post a Comment