ধানমন্ডি লেক ঢাকার ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় অবস্থিত একটি লেক।
লেকটি প্রাথমদিকে কাওরান বাজার নদীর একটি পরিত্যক্ত খাল ছিল যা তুরাগ নদীর
সাথে মিলিত হয়েছিল। লেকটি আংশিকভাবে বেগুনবাড়ি খালের সাথে মিলিত হয়েছে।
১৯৫৬ সালে ২৪০.৭৪ হেক্টর জমিতে ধানমন্ডি লেকের আশেপাশের এলাকাকে আবাসিক
এলাকা হিসেবে উন্নীত করা হয়। এই উন্নয়ন প্রকল্পে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার
১৬% লেকের জন্য বরাদ্ধ রাখা হয়েছিল।
ধানমন্ডি লেক এখন ঢাকার দর্শনীয় স্থানগুলোর একটি। ১৯৯৫ সালে সংস্কার করে লেকটিকে নতুন রূপ দেয়া হয়।
ঢাকারহাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, কলাবাগান, মিরপুর রোড ও শুক্রাবাদ এই
কয়েকটিএলাকার মধ্যবর্তী স্থানে ধানমন্ডি লেকের বিশাল অবস্থান। প্রত্যেকটি
এলাকারসাথে ধানমন্ডি লেকের সাথে যোগাযোগের পথ আছে। ধানমন্ডিতে বেশ বড় এলাকা
জুড়েএর অবস্থান। উত্তর-পূর্ব দিকে মিরপুর রোডের অবস্থান। দক্ষিণে
ধানমন্ডিক্লাব এবং আবাসিক এলাকার অবস্থান। আর উত্তরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি
জাদুঘরের অবস্থান।
সময়ের পরিক্রমায় লেকটি একটি দর্শনীয় সাথে পরিনত হয় এবং এর আশেপাশে
বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে উঠে যার মধ্যে অন্যতম হল, রবীন্দ্র সরোবর
যা লেকের পাশেই অবস্থিত।’ঢাকায় ঘোরুঘুরির জায়গার অভাব’। কথাটি আমরা খুব ঢালাওভাবে বলে ফেলি।
কথাটি ঠিক, আবার সব ক্ষেত্রে ঠিক নয়। ঢাকায় একদিন মুরুব্বি ও পরিবার
পরিজন নিয়ে একটি বিকেল শান্তভাবে কাটাতে চাইলে জায়গার অভাব আছে। সুন্দর,
নিরাপদ ও পারিবারিক জায়গার অভাব আছে। হাতেগোনা অল্প কিছু জায়গাই পাবেন
পারিবারিকভাবে সময় কাটানোর। এবং সেসব জায়গার থাকবে অস্বাভাবিক ভিড়। তবে
বন্ধুবান্ধব নিয়ে হইচই করার জন্য জায়গার অভাব নেই ঢাকায়। নাগরীক সকল
সুবিধাসহ প্রাকৃতিক ভাবে অনেক সমৃদ্ধ জায়গাও কম নয় ঢাকাতে। তবে সেসব
জায়গায় নিরাপত্তার অভাব ও অসামাজিক কাজের প্রাদৃর্ভাব দেয়া যায়। যেমন,
মিরপুর চিড়িয়াখানা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, রমনা পার্ক, সোরোয়ার্দি
উদ্যান, বলধা গার্ডেন ও আরও অনেক জায়গা আছে যেখানে পানি, লেক, নদী ইত্যাদি
আছে। কিন্তু নাই বেড়ানোর সুষ্ট পরিবেশ।
এ সবকিছু বিবেচনা নিয়ে ধানমন্ডি লেক একটি আদর্শ বেড়ানোর জায়গা।
ধানমন্ডি লেক নিয়ে অনেকের অনেক অভিযোগ থাকতে পারে বা থাকার সবধরনের কারনও
থাকতে পারে। তবে প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিভিন্ন সুবিধার কারনে ধানমন্ডি লেক ও
রবীন্দ্রসরোবর এখন ঢাকা শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় আড্ডা স্থল ও বেড়ানোর
জায়গায় পরিনত হয়েছে।
কৃষ্ণচূড়া, বটগাছ, রেইন্ট্রি, আমগাছ, কাঁঠাল গাছ, নিমগাছ, বকুল গাছ, কদম গাছসহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে এই লেক সংলগ্ন পার্কে। খাবার ব্যবস্থা পার্কটিতে রেষ্টুরেন্ট ও ফাষ্টফুড শপ রয়েছে। এছাড়া পার্কটির
প্রবেশমুখে কিছু অস্থায়ীদোকান এবং ভেতরেও ফেরিওয়ালারা চা, কফি, বাদাম,
ঝালমুড়ি ইত্যাদি বিক্রি করে। বিবিধ সৌখিন মৎস্য শিকারীদের জন্য অর্থের
বিনিময়ে মাছ শিকারের সুযোগ রয়েছে এখানকার লেকে। এখানে আপনি পাবেন আকাঁবাকা লেক, বিশাল বিশাল সব গাছপালাসহ অসাধারন
প্রাকৃতিক দৃশ্য। গাড়ি ব্রিজ, পায়ে চলা ব্রিজ, বসবার স্থান, শরীরচর্চার
জন্য জায়গা, খাবার দোকান ও রেষ্টুরেন্ট ও নৌকা ভ্রমণসহ অনেক নাগরীক
সুবিধা।
No comments:
Post a Comment