Pages

Sunday, January 24, 2016

পদ্মার চার স্থানে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার

গত শনিবার সরেজমিন ঘুরে এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় তিন মাস আগে ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের চারটি স্থানে পদ্মায় আড়াআড়িভাবে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। ছিডারচর গ্রামের দেলোয়ার সরকার মান্দারতলি এলাকায়, তারাবনিয়ার ইউসুফ সরকার হাইজ্জাবাজ এলাকায়, মান্দার বাজারের গনি ব্যাপারী উনচল্লিশ চর এলাকায় এবং বোরকাঠি গ্রামের আমির মোল্যা মান্দারতলি এলাকায় বেড়াগুলো স্থাপন করেছেন। বাঁশের তৈরি বেড়াগুলোতে ছোট ফাঁকের জাল পেতে রাখা হয়। মান্দারতলি এলাকার বেড়ায় কর্মরত শ্রমিক সাদেক সরদার বলেন, ৪০০ থেকে ৬০০ মিটার দৈর্ঘ্যের একেকটি বেড়ায় প্রতিদিন ৪০-৫০ হাজার টাকার মাছ ধরা পড়ে। এসব জালে আটকা পড়া মাছের বেশির ভাগই পোনাজাতীয়।
শরীয়তপুরের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকা, চাঁদপুর, মুন্সিগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে যাতায়াতে এই নৌপথটি ব্যবহার করতে হয়। বাঁশের বেড়া দেওয়ায় এই পথে নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। রাতে প্রায়ই বেড়াগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন নৌযানের ধাক্কা লাগে।
দুলারচর এলাকার ট্রলারচালক সিরাজ মিয়া বলেন, ‘প্রতিবছর এই এলাকায় কিছু মানুষ নদীতে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করে। নদীর মধ্যে দীর্ঘ বেড়া থাকার ফলে আমাদের ট্রলার চালাতে অসুবিধা হয়। রাতের আঁধারে ট্রলার চালাতে সমস্যা হয় সবচেয়ে বেশি। বেড়ার কারণে অনেক সময় ঘুরে আমাদের চলাচল করতে হয়।’
বেড়া স্থাপনকারী দেলোয়ার সরকার বলেন, ‘নদীতে মাছ শিকার করতে অনুমতি নিতে হয় তা আমার জানা নেই। বাঁশের বেড়ার কারণে নৌযান চলাচলে কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি হয় না। বেড়ার সঙ্গে যে জাল ব্যবহার করা হয়েছে তা অবৈধ নয়। এই জাল দিয়ে সব ধরনের মাছ শিকার করা যায়।’
কাঁচিকাটা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল হাসেম দেওয়ান বলেন, নদীতে বেড়া স্থাপন করার সময় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাধা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কিছু লোক বাধা উপেক্ষা করে বেড়া দিয়ে অন্যায়ভাবে মাছ শিকার করছেন।
অন্য তিনটি বেড়া স্থাপনকারী ইউসুফ সরকার, গনি ব্যাপারী ও আমির মোল্যাকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে পাওয়া যায়নি। তাঁদের মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।
শরীয়তপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবদুস সালাম বলেন, ‘প্রবহমান নদীতে কেউ বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করতে পারবে না। এ ধরনের কাজ মৎস্য আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে বেড়াগুলো অপসারণ করতে বলা হবে।’
ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল আহম্মেদ বলেন, মৎস্যসম্পদ রক্ষা করার জন্য সরকার খুবই সতর্ক। যাঁরা নদীতে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করছেন, তাঁদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হবে।


শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে পদ্মা নদীতে বাঁশের বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। নদীতে আড়াআড়ি বেড়া দেওয়ায় নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তি উপজেলার কাঁচিকাটা ইউনিয়নের চারটি স্থানে এভাবে বেড়া দিয়ে মাছ শিকার করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 
Info: http://www.24livenewspaper.com/sinfo/?url=www.prothom-alo.com/

No comments:

Post a Comment