Pages

Sunday, January 24, 2016

মেসির দুর্দান্ত গোলও হার মানল যাঁর কাছে

ইউরোপিয়ান লিগের ফুটবলাররা কাল যেন ঠিক করে নেমেছিলেন, তাঁরা সাধনা করবেন। অনেকটা সংগীতের রাগ সাধনার মতো, তাঁরা করবেন 'ভলি-সাধনা'। কে কত সুন্দর করে ভলি করতে পারেন! তাঁরা সাধনা করলেন, আর তাতে কিছু অনিন্দ্য সুন্দর গোল দেখার সৌভাগ্য হয়ে গেল স্টেডিয়ামের ভেতরে কিংবা টিভির পর্দার সামনে বসা দর্শকদের।
Image result for football player messi photo
স্পেনে বার্সেলোনা, ইংল্যান্ডে টটেনহাম আর ফ্রান্সে পিএসজি—তিনটি ম্যাচই কাল হয়েছে প্রায় একই সময়ে। বাংলাদেশি দর্শকদের জন্য তাতে সুবিধা-অসুবিধা দুটিই হয়েছে। কেউ শুধু বার্সেলোনার খেলা দেখেছেন, কেউ টটেনহামের, কেউ বা পিএসজির। আবার কেউ হয়তো রিমোটের বোতাম চেপে এ চ্যানেল-ও চ্যানেলে সাঁতরেছেন। কিন্তু সবগুলো গোল কি লাইভ দেখার সৌভাগ্য কারও হয়েছে? বার্সেলোনার খেলা দেখেছেন, তাঁরা হয়তো ভেবেছেন, ‘কী গোলটাই না করলেন মেসি! ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে বক্সের বাইরে থেকে দৌড়ে এসে সাইড ভলি—আহ! কী টাইমিং, কী পারফেকশন, কী ভলি! এর চেয়ে সুন্দর গোল আর হতে পারে না।’

মেসির গোলটি অবিশ্বাস্য, কোনো সন্দেহ নেই। মালাগার বিপক্ষে বার্সাকে জয়ও এনে দিয়েছে মেসির এই দুর্দান্ত ভলি। এমনিতে অবিশ্বাস্য গোল করাটাকে নৈমিত্তিক ব্যাপার বানিয়ে ফেলেছেন এই বার্সা ফরোয়ার্ড। তবে এমন ভলি করে গোল মেসিকে খুব বেশি একটা করতে দেখা যায়নি। আর সেই গোলেই জয়—বার্সা ভক্তদের জন্য তো ছিল পরম পাওয়া।

তবে ‘ভলি-সাধনে’ কাল ব্যালন ডি’অর জয়ী বার্সা ফরোয়ার্ডকে পেছনে ফেলেছেন টটেনহামের ডেলে আলি। এই ইংলিশ তরুণের গোলটিকে যে এরই মধ্যে দেখা হচ্ছে এই বছরের ফিফার বর্ষসেরা গোলের পুরস্কার পুসকাস অ্যাওয়ার্ডের দাবিদার হিসেবে।

ক্রিস্টাল প্যালেসের সঙ্গে উত্তেজনার ‘লন্ডন-ডার্বি’, ম্যাচের আর ছয় মিনিটই বাকি—এমন সময় এই দুর্দান্ত ভলি করে টটেনহামকে এগিয়ে দিলেন। এক ডিফেন্ডারের মাথার ওপর দিয়ে চিপ করে বল মাটিতে পড়ার আগেই বুলেট গতির ভলি করলেন আলি, বাঁকানো শটটি ধরার কোনো ক্ষমতাই ছিল না প্যালেস গোলকিপার হেনেসির। এ এমন এক গোল, লিখে বা বলে এর সৌন্দর্য বোঝানো যায় না। দেখতেই হবে আপনাকে।

মেসি ও আলির ভলি যদি হয় ক্ষিপ্রতা ও শৈলীর ‘অসহ্য’ সৌন্দর্যের মিশ্রণ, তবে পিএসজির হয়ে অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার ভলিটিকে বলতে হবে অলস সৌন্দর্য। লুকাসের কাছ ভেসে আসা বল পেলেন অ্যাঁজার বক্সের বাইরে।

কয়েকজন ডিফেন্ডার ধেয়ে আসছিলেন দেখে বল মাটিতে পড়ার আগেই আলতো ভলিতে বল জড়িয়ে দিলেন জালে। এত ঠান্ডা মাথায়, এত নির্বিকার ভঙ্গিতে করলেন, দেখে মনে হলো যেন এসব চাপ-টাপ থেকে অনেক আগে বৈরাগ্য সাধনে মুক্তি নিয়েছেন এই আর্জেন্টাইন উইঙ্গার।

এক রাতে তিনটি সৌন্দর্য মাখা, শিল্পিত গোল—ফুটবল-পিয়াসিদের তৃষ্ণা আকণ্ঠ মিটেছে সন্দেহ নেই!
Info: http://www.prothom-alo.com/sports/article/74911

No comments:

Post a Comment