Pages

Tuesday, May 3, 2016

‘নিজের হাঁপানি নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন’

হাঁপানি হলো অতি-সংবেদনশীলতা উত্তেজনার কারণে শ্বাসনালীর শাখা-প্রশাখাগুলোর সাময়িক সংকোচন শ্বাসনালীগুলোর দেওয়ালে একটা স্তর থাকে অনৈচ্ছিক পেশীর উত্তেজনায় পেশীগুলো সংকুচিত হয় অর্থাৎ নালীর ভেতরটা সরু হয়ে যায় হাঁপানির সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি রোগের জন্য কোনো কিছুকে এককভাবে দায়ী করা যায় না গবেষণায় দেখা গেছে, কারও কারও বংশগত কারণে বা পরিবেশগত কারণেও রোগ হতে পারে কারও নিকটাত্মীয় যদি এতে আক্রান্ত থাকে বা কেউ যদি বিভিন্ন দ্রব্যের প্রতি অতিমাত্রায় অ্যালার্জিক হয়, তাহলে তার হাঁপানি হতে পারে
‘নিজের হাঁপানি নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন’হাঁপানির প্রধান উপসর্গ হলো
শ্বাসকষ্ট
কাশি
বুকে চাপ লাগা
নিঃশ্বাসে সাঁই-সাঁই আওয়াজ।
প্রায়শ রাতে শ্বাসকষ্ট বাড়ে।

যে সব উত্তেজক থেকে হাঁপানির আক্রমণ শুরু হতে পারে, সেগুলো রকম
ঘরের ঝুল-ধুলোয় থাকা ডাস্ট-মাইট বা ধুলোর পোকা
কুকুর-বেড়ালের লোম, পাখীর পালক
বাতাসে উদ্ভিদের রেণু
সিগারেট-বিড়ির ধোঁয়া
সেন্ট-পারফিউম
কাজের জায়গায় ধোঁয়া নানা রাসায়নিক
পরিবেশ দূষণ
অতিরিক্ত পরিশ্রম
ঠান্ডা হাওয়া
ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া-ঘটিত জীবাণুসংক্রমণ
কিছু কিছু ওষুধ
মানসিক আবেগ
পাকস্থলীর এসিড গ্রাসনালী হয়ে শ্বাসনালীতে আসা।
রোগ-নির্ণয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা
সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা হলো স্পাইরোমিটার দিয়ে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা পরীক্ষা করা। প্রথমে পরীক্ষা করে যদি দেখা যায় কর্মক্ষমতা কম, তাহলে সালবুটামল নামক শ্বাসনালী ক্প্রসারক (bronchodilator) দিয়ে নেবুলাইজ করে আবার পরীক্ষা করা হয়। দ্বিতীয় বার কর্মক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি হলে হাঁপানির রোগ-নির্ণয় নিশ্চিত।
হাঁপানির চিকিৎসা
হাঁপানিতে যে ওষুধগুলো ব্যবহার করা হয়, সেগুলোকে দুটো প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়শ্বাসনালী-প্রসারক প্রদাহরোধী।
শ্বাসনালী প্রসারকগুলো শ্বাসনালীর মাংসপেশীর সংকোচন প্রতিহত করে শ্বাসনালীর রাস্তাকে চওড়া করে ফুসফুসে বাতাস চলাচলের পরিমাণ বাড়ায়।
বর্তমানে বলা হয়প্রদাহরোধী ওষুধগুলো শ্বাসের সঙ্গে নেওয়াই হলো হাঁপানির দীর্ঘকালীন চিকিৎসার মূল কথা।

হাঁপানি প্রতিরোধ
হাঁপানি শুরুর উত্তেজকগুলোর কথা মনে করুন। সেগুলোকে এড়িয়ে চললেই হাঁপানির টানের সংখ্যা অনেকটা কমানো যায়।
পশুপাখীর মল লোম-পালক এড়িয়ে চলতে হবে। পশু-পাখী না পোষাই ভালো।
ঘরের ঝুলে থাকা ধুলো পোকা বা মেঝেতে থাকা ছত্রাক নির্মূল করা মুশকিল। তবু ঘর পরিষ্কার রাখতে হবে। ভেজা স্যাঁতসেতে আবহাওয়ায় ছত্রাক বাড়ে, তাই ঘরে হাওয়া চলাচলের ব্যবস্থা থাকা চাই।
পালকের বালিশ, উলের কম্বল ব্যবহার না করা ভালো।সপ্তাহে একদিন গরম জলে বালিশের ওয়াড়, চাদর, কম্বল, ইত্যাদি ধুতে হবে।
ধূমটান করা চলবে না, যেখানে অন্যে ধূমটান করছেন সে পরিবেশও এড়িয়ে চলতে হবে।
ডিওডরেন্ট, সুগন্ধি প্রসাধনী, কড়া জীবাণুনাশক এবং সব কড়া গন্ধের জিনিস এড়িয়ে চললে ভালো।

হাঁপানি রোগীর ভবিষ্যৎ
যে সব রোগীর রোগ মৃদু ধরনের এবং ছোটো বয়সে শুরু হয়, তাঁদের ৫০% থেকে ৮০%-এর রোগ বয়স বাড়লে ভালো যায়।
হাঁপানির ওষুধ সঠিকভাবে ব্যবহার করলে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক জীবন যাপন সম্ভব। হাঁপানি সম্পূর্ণ ভালো করার জন্য এখনো কোনো ওষুধ বের হয়নি। তবে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে রোগ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

No comments:

Post a Comment