Pages

Sunday, May 8, 2016

চট্টগ্রাম আবাহনীর নতুন ইতিহাস

স্বাধীনতা কাপের শিরোপা জিতে বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন ইতিহাস গড়লো চট্টগ্রাম আবাহনী। মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে হেসেছিল ঢাকা আবাহনীর সমর্থকরা। বিজয়ের হাসি তারা হাসবে বলেই মিছিল নিয়ে এসেছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। যেখানে স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীর মুখোমুখি ঢাকার জায়ান্টরা। হকিতে পারলেও ফুটবলে  তেমনটা ঘটেনি। হকির মতো ফুটবলে হাসতে পারেনি ঢাকা আবাহনী। দলবদলের জটিলতায় দলে ছিল না মামুনুল ইসলামসহ জাতীয় দলের পাঁচ নির্ভরযোগ্য ফুটবলার। গ্রুপ পর্বের পারফরমেন্সও ছিল সাদামাটা। সেমিফাইনালে টাইব্রেকার ভাগ্য পরীক্ষায় জিতেছিল বন্দর নগরীর দলটি। তারাই গতকাল ঢাকা আবাহনীকে হারিয়ে স্বাধীনতা কাপের প্রথম শিরোপার স্বাদ পেলো। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে চট্টগ্রাম আবাহনীর জয়টি ২-০ ব্যবধানের। লিওনেল সেইন্ট প্রিয়ারেক্সের গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর রুবেল মিয়ার দৃষ্টিনন্দন গোলে জয়ের হাসি হেসেছে জোসেফ পাভলিকের দল। মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যে ঢাকা আবাহনীর সব সম্ভাবনা মিলিয়ে যায়। টুর্নামেন্ট সেরা ও ম্যাচ সেরাও হয়েছেন এ দুই ফুটবলার।
সেমিফাইনালে ৬-০ গোলে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে উড়িয়ে দেয়া আবাহনীর শিরোপা নির্ধারণী খেলায় ছিল না প্রত্যাশিত ধার। এদিন একেবারে নিষ্প্রভ ছিলেন আবাহনীর তিন বিদেশি ফরোয়ার্ড সানডে সিজুবা, লি টাক ও কামারা সারবা। পুরো ম্যাচে অনেক ভুল করেছেন আবাহনীর ফুটবলাররা। ম্যাচ শেষে তা স্বীকার করেছেন দলের কোচ অমলেশ সেন। প্রথমার্ধে বলার মতো দুটি আক্রমণই ছিল চট্টগ্রাম আবাহনীর করা। ২৪তম মিনিটে রেজাউল করিম রেজার নেয়া শট কাছের পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। ৪৩তম মিনিটে প্রতিআক্রমণ থেকে নেয়া প্রিয়ারেক্সের শট দারুণ দক্ষতায় ফেরান আবাহনীর গোলরক্ষক সুলতান আহমেদ শাকিল। এক মিনিট পর রুবেলের শটও কর্নারের বিনিময়ে ফিরিয়ে আবাহনীর ত্রাতা এই গোলরক্ষক। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ম্যাচের ফল বের করে নেয়ার ঘোষণা আগের দিনই দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম আবাহনীর অধিনায়ক জাহিদ হোসেন। ঘোষণা সত্যি করতে দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের গতি আরও বাড়ায় দলটি। সুফলও পেয়ে যায় ৫৫তম মিনিটে। সতীর্থের বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সের মধ্যে মাটি কামড়ানো শটে চট্টগ্রাম আবাহনীকে এগিয়ে নেন প্রিয়ারেক্স। এগিয়ে যাওয়ার রেশ থাকতেই ৬২তম মিনিটে রুবেলের হাত ধরে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় সব শেষ শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপের শিরোপা জেতা দলটি। কৌশিক বড়ুয়ার ক্রসে বাইসাইকেল কিকে শাকিলকে পরাস্ত করেন এই ফরোয়ার্ড। যা তাকে ম্যাচ সেরার পুরস্কার এনে দেয়। প্রতিপক্ষের তিন নির্ভরযোগ্য ফরোয়ার্ড লি টাক, ৬ গোল করা সানডে সিজুবা, কামারা সারবাকে কড়া পাহারায় রেখে দলকে জয়ের পথে রাখেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ডিফেন্ডাররা। ৭১তম মিনিটে  সেনেগালের ফরোয়ার্ড সারবাকে তুলে নিয়ে নাবীব নেওয়াজ জীবনকে নামান আবাহনীর কোচ অমলেশ সেন, কিন্তু গোল অধরাই থেকে যায় দলটির। শেষ দিকে আবাহনীর ডিফেন্ডার ওয়ালী ফয়সালের দূরপাল্লার শট গোললাইন  থেকে ফেরান ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ ইব্রাহিম। দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত সময়ে ভাগ্যের জোরে বেঁচে যায় চট্টগ্রাম আবাহনী। বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে ডিফেন্ডার সোহেল রানা প্রায় আত্মঘাতী গোল করতে বসেছিলেন; পোস্ট ঘেঁষে বল বাইরে বেরিয়ে গেলে শিরোপা জয়ের উৎসব নিশ্চিত হয়ে যায় বন্দর নগরীর দলটি।
Info: http://www.mzamin.com

No comments:

Post a Comment